সম্পদের হিসাব না দিলে কী হবে সরকারি চাকরিজীবীদের?
সরকারি চাকরিজীবীদের আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সম্পদের বিবরণী জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরপর প্রতি বছর ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে এই বিবরণী জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ১ সেপ্টেম্বরের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশনা জারি করা হয়।
কেন সম্পদের বিবরণী জমা জরুরি?
সরকারি কর্মচারীদের দুর্নীতি প্রতিরোধ, স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ অনুযায়ী, এই নিয়ম প্রণয়ন করা হয়েছে। দেশের সাড়ে ১৫ লাখ সরকারি কর্মচারীর জন্য এটি বাধ্যতামূলক।
সম্পদ-বিবরণী জমার নিয়ম
- ক্যাডার/নন-ক্যাডার (নবম বা তদূর্ধ্ব গ্রেড):
নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগের সচিবের কাছে জমা দিতে হবে। - ১০ম থেকে ২০তম গ্রেডের কর্মচারী:
নিজ নিজ নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে হবে।
প্রক্রিয়া:
১. নির্ধারিত ছকটি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট বা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ওয়েবসাইট থেকে সংগ্রহ করতে হবে।
২. সিলগালা খামে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে হবে।
গোপনীয়তা সংরক্ষণ
- আদালতের নির্দেশ বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া সম্পদ-বিবরণীর তথ্য প্রকাশযোগ্য নয়।
- সম্পদ-বিবরণীকে গোপনীয় দলিল হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যা তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯-এর আওতায় আসে না।
সময়সীমা অমান্য করলে শাস্তি
নির্ধারিত সময়ে সম্পদের হিসাব জমা না দিলে, ভুল তথ্য প্রদান করলে বা তথ্য গোপন করলে সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ অনুযায়ী শাস্তি দেওয়া হবে।
লঘু দণ্ড:
- তিরস্কার
- পদোন্নতি বা বেতন বৃদ্ধি স্থগিত রাখা
- ক্ষতিপূরণ আদায়
- নিম্নতর বেতন গ্রেডে অবনমিতকরণ
গুরু দণ্ড:
- নিম্নপদে অবনমিতকরণ
- বাধ্যতামূলক অবসর
- চাকরি থেকে অপসারণ
- চাকরি থেকে বরখাস্ত
পরিবর্তন ও পরিমার্জন
সরকার প্রয়োজনে নিয়মগুলো পরিবর্তন বা সংশোধন করার এখতিয়ার রাখে।
সরকারি চাকরিজীবীর সংখ্যা
২০২১ সালের স্ট্যাটিসটিকস অব সিভিল অফিসার্স অ্যান্ড স্টাফস প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে সরকারি চাকরিজীবীর সংখ্যা ১৫ লাখ ৫৪ হাজার ৯২৭ জন।
এমন নিয়ম ও শাস্তির মাধ্যমে কর্মক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা আরও নিশ্চিত করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।